বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন জলবায়ুর এই পরিবর্তন বিভিন্ন প্রাকৃতিক সমস্যা সৃষ্টি করবে ও দুর্যোগকে আরও ভয়াবহ করে তুলবে। জলবায়ু পরিবর্তন বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি করবে। যেমন—
- ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হার ও মাত্রা বৃদ্ধি করবে।
- হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাত ও আকস্মিক বন্যা দেখা দেবে।
- বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে খরা দেখা দেবে।
- সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাবে এবং নদীর পানিতে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের এই প্রভাব মোকাবিলা করার জন্য আমরা দুইটি কৌশল অবলম্বন করতে পারি। একটি হলো “জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমানো”। অপরটি “জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজন ”।
জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমানো
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ হচ্ছে বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি। সুতরাং বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনের পরিমাণ কমিয়ে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কমাতে পারি। এজন্য কয়লা, তেল, প্রাকৃতিক গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে। নবায়নযোগ্য শক্তি যেমন— সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি ইত্যাদির ব্যবহার বাড়াতে হবে। বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে আমরা বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড হ্রাস করতে পারি। দৈনন্দিন জীবনে শক্তির ব্যবহার কমিয়েও আমরা কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন কমাতে পারি। এই সকল কর্মকাণ্ড দীর্ঘমেয়াদী জলবায়ু পরিবর্তন হ্রাস করতে সহায়তা করবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজন
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের হার কমানোর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তবে জলবায়ুর যে পরিবর্তন ইতোমধ্যে সাধিত হয়েছে তার সাথে আমাদের খাপ খাওয়াতে হবে। পরিবর্তিত জলবায়ুতে বেঁচে থাকার জন্য গৃহীত কর্মসূচিই হলো ‘জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানো বা অভিযোজন'। অভিযোজনের উদ্দেশ্য হলো জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি কমানো ও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ। যেমন—
- ঘরবাড়ি, বিদ্যালয়, কলকারখানা ইত্যাদি অবকাঠামোর উন্নয়ন;
- বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ;
- উপকূলীয় বন সৃষ্টি ;
- লবণাক্ত পরিবেশে বাঁচতে পারে এমন ফসল উদ্ভাবন ;
- জীবন যাপনের ধরন পরিবর্তন ;
- জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ সম্পর্কিত ধারণা সকলকে জানানো ।
জলবায়ুর পরিবর্তন বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে। ছবিতে জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর বিভিন্ন উপায় দেখানো হলো—
বাংলাদেশ পৃথিবীর দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। আমরা বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হই। এ সকল দুর্যোগের মধ্যে রয়েছে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, খরা, টর্নেডো, নদী ভাঙন ইত্যাদি। তাই আমাদের বাংলাদেশের জলবায়ু সম্পর্কে জানা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করার জন্য পূর্ব প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন।
আরও দেখুন...